আপডেট

Friday, February 6, 2015

মেয়েরা কেন বিজ্ঞানবিমুখ

     
পরীক্ষাগারে ব্যস্ত এক নারী। ছবি: এএফপিএকটা সময় ছিল, যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল ছেলেদের পদচারণে মুখর। এমনকি এখনো নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে মেয়েদের আগ্রহটা বেশি দেখা যায়। এই রহস্যের সঠিক কারণ আজও জানা যায়নি।
পদার্থবিজ্ঞান ও অঙ্কের মতো বিষয়গুলোতে শিক্ষাবিদ হিসেবে মেয়েদের উপস্থিতি কম। আবার সামাজিক বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের বিষয়গুলোতে নারী-পুরুষ উভয়েই সমান। চিত্রশিল্পের ইতিহাস ও মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে, অন্য দিকে অর্থনীতি ও দর্শনের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে পুরুষেরা।

একটি কারণ হতে পারে কুসংস্কার বা প্রচলিত ধারণা যে, নারীরা পারে না, যা কৃষ্ণাঙ্গদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নারীদের উপস্থিতি কম হওয়ার জন্য আরও কিছু কারণ রয়েছে। একটি হচ্ছে বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোর বেলায় পরীক্ষাগারে অনেকটা সময় দিতে হয়। সন্তান লালনপালনে এটা সহায়ক নয় বলে তা নারীর উপস্থিতি কম হওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

দ্বিতীয় প্রচলিত ধারণাটি হলো, যেসব বিষয়ে পদ্ধতিগত চিন্তাভাবনার প্রয়োজন হয়, সে বিষয়গুলোতে পুরুষদের চেয়ে নারীরা কম উৎসাহী থাকে। শেষ প্রচলিত ধারণাটি হলো, গড়ে যদিও নারী-পুরুষদের মধ্যে সমান সক্ষমতা রয়েছে, তবে আলাদাভাবে চিন্তা করলে নারীর চেয়ে পুরুষদের সক্ষমতা অনেক বেশি।

তবে আসল কারণ জানতে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সারাহ-জেন লেসলি ও ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দ্রেই শিম্পিয়ন একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যোতির্বিদ্যা থেকে শুরু করে সমাজবিজ্ঞান পর্যন্ত ৩০টি বিষয় নিয়ে কাজ করেন—এমন এক হাজার ৮০০ জন শিক্ষাবিদের কাছে তাঁরা কয়েকটি প্রশ্ন রাখেন। ওপরে যে প্রচলিত ধারণাগুলোর কথা বলা হয়েছে, এ নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের মনোভাব জানতে চাওয়া হয়। এই গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, নারী-পুরুষের মধ্যে জ্ঞানবৈষম্য নিয়ে যুগ যুগ ধরে ধারণা প্রচলিত, সেটাই প্রতিফলিত হয়েছে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মতামতে।

নারী ও কৃষ্ণাঙ্গরা এমন এক সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠে, যেখানে তাদের প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেওয়া হয়, অঙ্ক ও পদার্থবিজ্ঞান পড়ার যোগ্যতা তাদের নেই। একসময় এই বিশ্বাসই শেকড় গেড়ে বসে। তাই নিয়োগকারীরা পিএইচডি বা অন্য যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে যখন নিয়োগ দেয়, তখন সহজাত এই কুসংস্কার বা প্রচলিত ধারণাটাই মাথায় রাখে।

গবেষণায় আরও পাওয়া যায়, বর্তমানে অনেক অধ্যাপকই বুদ্ধিমত্তা ও কঠোর পরিশ্রমের চেয়ে কিছু বিশেষ প্রতিভায় বিশ্বাসী। তাই এ ধরনের বিষয়গুলোর পিএইচডিতে নারীদের সংখ্যাও থাকে কম। কারণ ধরেই নেওয়া হয় নারীদের সহজাত প্রতিভা থাকে না।